হবিগঞ্জে সম্পদের লোভে আপন ভাইকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০১৭, ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের একটি বাড়িতে কোটি টাকার সম্পত্তির লোভে আপন ভাইকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। এমন খবরে ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার শিকার রুমান মিয়াকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নির্যাতনকারী ভাই-ভাবী পালিয়ে গেছে। পরে উদ্ধারকৃত রুমান মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে রুমান মিয়াকে তার বড় ভাই আব্দুল সালাম মিন্টু ও ভাবী ঝর্না আক্তার শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালায়। এতে করে শিকলে বাধা রুমান মিয়া দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে আশপাশের লোকজন প্রতিবাদ করলেও মিন্টু তাতে কোনও কর্ণপাত করেনি।
রবিবার রাতে এ ব্যাপারে রুমানের বড় বোন হেনা আক্তার তার ভাইকে উদ্ধারের জন্য সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে বিকেলে উপ-পরিদর্শক এসআই রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিকলে বাঁধা রুমান মিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ সময় তার বড় ভাই আব্দুস সালাম মিন্টু ও ভাবী ঝর্না আক্তার পালিয়ে যায়।
সন্ধ্যার দিকে সদর থানা পুলিশ উদ্ধারকৃত রুমান মিয়াকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোলেমান মিয়ার আদালতে হাজির করে। আদালত তার বক্তব্য শুনে রুমান মিয়াকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার গিয়াস উদ্দিনকে রুমান মিয়ার যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক ঘটনার শিকার ওই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ভাই-ভাবীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে পইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির একটি ঘরে রুমান মিয়াকে বড় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ অবস্থাতেই তাকে মলমূত্র ত্যাগে বাধ্য করা হয়। খাবারের সময় তাকে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী কিছু খাবার দেওয়া হয়। তবে রুমান মিয়ার আচরণ দেখে তাকে পাগল মনে হয়নি, বরং সুস্থ মানুষই মনে হয়েছে।
সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমান মিয়া বলেন, আমার অংশের সম্পত্তি নেওয়ার জন্য শাকিল আমাকে দিনের পর দিন শিকলে বেঁধে রেখেছে। মাঝে মাঝে আমাকে ইনজকেশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখা হয়। শুধু বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য খাবারটুকু দেওয়া হয়েছে। এমনকি পাগল বানানোর জন্য জোরপূর্বক ইনজকেশনও পুশ করা হয়েছে।
রুমানের বড় বোন হেনা আক্তার জানান, আমার ভাই মিন্টু রুমানরে সম্পত্তি লাভের আশায় তাকে পাগল সাজানোর চেষ্টা করেছে।