বিশ্বনাথে ১০ বছরের শিশুকে শিকলে বেঁধে টানা ৩ দিন নির্যাতন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০১৭, ৪:২৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের সমেমর্দান গ্রামে জাকির মিয়া নামের ১০ বছরের এক শিশুকে শিকলে বেঁধে টানা তিনদিন আটকে রেখে নির্যাতন করেছে মামা। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করেছে।
স্থানীয়রা জানান, জাকির নামের অনাথ ওই শিশুটি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালা বাজার ইউনিয়নের বহরকাটা গ্রামের মৃত চমক আলীর ছেলে। প্রায় ৮/৯ বছর আগে তার পিতা চমক আলী মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০১০ সালে মা গেদনি বেগমের অন্যত্র বিয়ে হলে অনাথ এ শিশুটি বিশ্বনাথের বাগিচা বাজারের পার্শ্ববর্তি কামালপুর গ্রামের পালক পিতা ফারুক মিয়ার কাছে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি জাকিরকে পালক পিতা ফারুক মিয়ার কাছ থেকে তার মামা সমেমর্দান গ্রামের ফারুক মিয়া নিয়ে যান এবং অন্যত্র কাজে দেয়ার পায়তারা করেন। কিন্তু জাকির তার পালক পিত্রালয় ছাড়া অন্য কোথাও যেতে না চাইলে মামা তাকে শিকলে বেঁধে রাখেন।
ঈদের পরদিন (২৭ জুন) থেকে মামা ফারুক মিয়ার বসত ঘরে তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশের এসআই কল্লোল গোস্বামী গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) রাতে শিশু জাকিরকে উদ্ধার করেন।
পরদিন (৩০ জুন) শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাকে স্থানীয় কাশিমপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা এনামুল ইসলাম এনামের জিম্মায় দিয়ে আসেন। এরপর শিশু জাকির তার পালক পিতার কাছে ছুটে যায়। বর্তমানে সে কামালপুর গ্রামের ওই পালক পিতার নিকট ভালই আছে বলে তার পালক পিতা জানিয়েছেন।
এপ্রসঙ্গে জানতে চাইলে, বিশ্বনাথ উপজেলা যুবলীগ নেতা এনামুল ইসলাম এনাম বলেন, জাকিরকে তার হেফাজতে দেয়া হলেও বর্তমানে সে তার পালক পিতার কাছে রয়েছে। কারণ সেখানে স্বাধীনভাবে সে বসবাস করতে পারে বলেই অন্য কোথাও যেতে চায় না।
থানার এসআই কল্লোল গোস্বামী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ২৯জুন রাতে জাকিরকে তার মামা ফারুক মিয়ার বসত ঘর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এনামুল ইসলামের জিম্মায় দেয়া হয়।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটি যাতে কোথাও না যেতে পারে সে জন্যে মামা তাকে বেঁধে রাখেন। পুলিশ তাকে উদ্ধার করার পর তিনি (সমাজসেবা কর্মকর্তা) তার অফিসের স্টাফ পাঠিয়ে তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে দেয়া হয়। শিশুটির যাতে অযত্ন না হয় সেজন্যে তিনি প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রাখছেন বলেও জানান।