বিশ্বনাথে সুরমা নদীর ভাঙন : ২ গ্রামের শতাধিক পরিবার গৃহহারা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মে ২০১৭, ৩:৩১ অপরাহ্ণ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
বিশ্বনাথে সুরমা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদী ভাঙ্গনে লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর ও শাহপুর গ্রামের মাথা গোজাঁর ঠাঁই হারিয়ে গৃহহারা হয়েছেন প্রায় শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দূর্ভোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় পুরো গ্রামের লোকজনের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। অনেক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো নিয়ে গৃহকর্তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। এসব পরিবারের কথা চিন্তা করে জরুরী ভিত্তিতে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে, এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের প্রভাবশালী সাবেক এক ইউপি সদস্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী ভাঙন এলাকা থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে আসছেন। ফলে দিন দিন ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরীহ গ্রামবাসী মাটি উত্তোলনে বাঁধা দিলে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেন ঐ প্রভাবশালী ব্যক্তি।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা পরিবারগুলো অন্যত্র বাড়িঘর তৈরি করলেও নদীর ভাঙন থেকে তারা রক্ষা পাচ্ছেন না। ধীরে ধীরে সেই সব বাড়ি-ঘর ও বিলীন হয়ে যাচ্ছেন। ফলে গৃহহারা হয়ে পড়েছেন অনেক পরিবার। আতংকে রয়েছেন পুরো গ্রামবাসী। কয়েক বছর পূর্বে মাহতাবপুর গ্রামের পশ্চিম দিকে নদী ভাঙন রোধে ব্লক বসানো হয়। এরপর পূর্ব দিকে ভাঙন বাড়তে থাকে। ২০০৯ সালের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে মাহতাবপুর, শাহপুর, কবরস্থান, একটি মাজার, মসজিদ, গোলচন্দ বাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়।
গত বৃহস্পতিবার নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদী ভাঙনের ফলে বেশ কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের আর্তনাতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এসেছেন শুনে এলাকার শতশত মানুষ জড়ো হতে দেখা যায়।
এলাকাবাসী জানান, ২০১০ সালে এই নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন তৎকালীন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার। তিনি পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার আহবানে পানি সম্পদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব’সহ পানি মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ লামাকাজী নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। তাই নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে গ্রামবাসীকে রক্ষা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে, নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার মাহতাবপুর গ্রামে এক সভা অনুষ্ঠিত। সভায় বক্তব্য রাখেন, সমাজসেবক এ কে এম দুলাল, গ্রামের মুরব্বি রুমন আলী, জাহির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, আশখ আলী, আব্দুস ছালাম, আব্দুল ওয়াহিদ, সফর আলী, জুনেদ মিয়া, বারিক মিয়া, আলী আফছার, জুবায়ের মিয়া প্রমুখ।