এবারের সেরা বৃটিশ বাংলাদেশী শিল্পপতি সিলেটী জাকির
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ মে ২০১৭, ২:২৬ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিস:
এবারের সেরা বৃটিশ বাংলাদেশী শিল্পপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এক সিলেটী। সৌভাগ্যবান এই মানুষটি হলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত এম জাকির হোসেন।
গত রবিবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টায় বৃটেনের মিডল্যান্ডে দেশ ফাউন্ডেশন ইউকে’র উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে সেরা বৃটিশ বাংলাদেশী শিল্পপতি হিসেবে এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৃটেনের স্বরাষ্ট মন্ত্রী ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সহ বৃটেনের প্রায় প্রত্যেকটি সিটি মেয়র এবং ব্রিটিশ এমপি এবং বৃটেনে অবস্থানরত বাংলাদেশী স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ।
জাকির হোসেনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জের গঙ্গাজল এলাকায়। আব্দুল লতিফ তাপাদারের ৩ ছেলে এবং ২ মেয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়।
অনুষ্টানে এম জাকির হোসেন বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত তাই সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি এবং আমার পিতা মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ সাফল্যে তিনি ধন্যবাদ জানান তার স্ত্রী, সন্তান এবং সহকর্মীবৃন্দকে।
তিনি তার এ এওয়ার্ড বৃটেনে অবস্থানরত বাঙ্গালী কমিউনিটিকে উৎসর্গ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, স্বপ্ন, সাহস আর সততা- এ তিন ‘স’ মিলে যে আকাশকে হাতের মুঠোয় আনা যায়, তারই এক উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব জাকির হোসেন। নিজের স্বপ্ন, সাহস, সততা, চেষ্টা, একাগ্রতা আর কঠোর পরিশ্রমে কল্পলোকের আকাশকে মর্তে নামিয়ে এনেছেন তিনি। সাধারণ এক শ্রমিক থেকে ব্রিটেনের অন্যতম প্লাস্টিক কোম্পানী ‘জেডএইচকে প্লাস্টিক লিমিটেড’র মালিক জাকির।
২০০৩ সালে সস্ত্রীক যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে পাড়ি জমান জাকির। সেখানে গিয়ে সিংহভাগ বাংলাদেশী, বিশেষ করে সিলেটিদের মতো রেস্টুরেন্টে কাজ নেন নি জাকির। ব্যতিক্রমী জাকির সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন একটি প্লাস্টিক কোম্পানীতে। চলে কঠোর পরিশ্রম। চলে স্বপ্নের আকাশ ছুঁতে জাকিরের প্রচেষ্টা। জাকিরের সাহস, সততা আর একাগ্রচিত্তে পরিশ্রম বৃথা যায় নি। যে প্রতিষ্ঠানে একজন সাধারণ শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন জাকির, সেই প্রতিষ্ঠানই কিনে ফেলেন তিনি।
নতুন নাম, ‘জেডএইচ কে প্লাস্টিক লিমিটেড’ নামে গড়ে ওঠে সেই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রতিবছর জাকিরের টার্নওভার প্রায় ২ মিলিয়ন পাউন্ড। ব্রিটেনের বিভিন্ন কোম্পানী ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যায় জাকিরের প্রতিষ্ঠানের পণ্য।
যুক্তরাজ্যে থাকলেও দেশের তরে মন পড়ে থাকে জাকির হোসেনের। দেশের বিভিন্ন দুর্যোগময় সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। যার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় প্রলয়ঙ্কারী সিডর’র কথা। ওই সময় সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান প্রদান করেন জাকির। এছাড়া বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আর্তপীড়িত মানুষের খবর দেখলে সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।