আসু রায় এখন অপেক্ষায় কবে এ জীবনের শেষ হবে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ এপ্রিল ২০১৭, ১১:১৩ অপরাহ্ণ
ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ জীবন মানেই যুদ্ধ, কিন্ত এ কেমন যুদ্ধ? দীর্ঘ বিশ বছর ধরে নবীগঞ্জ বাজারে একটি বস্তার ঝুলী কাঁধে নিয়ে বয়সের ভারে নুয়ে নুয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মানসিক ভারসাম্যহীন আসু রায় (৭০)। জীবন তার কাছে বুঝা হয়ে গেছে। অটো রিকসা দুর্ঘটনায় আহত আসু রায় প্রায় এক মাস যাবত নবীগঞ্জ হাসপাতালে বেডে অপেক্ষায় আছেন কবে এ জীবনের শেষ হবে। বিশ বছর ধরে মানসিক প্রতিবন্ধী নবীগঞ্জ পৌর এলাকার মৃত জতি রায়ের কন্যা আসু রায় জানাতে পারেনি তার স্বামী বা সন্তান আছে কি নেই। আসু রায়ের এক আত্বিয় জানান, বিগত সময়ে গরিব বাবার পক্ষে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পাড়ায় আজ বিশ বছরে ধরে তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে নবীগঞ্জ শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এক সময়ে হবিগঞ্জ গোপাল আখড়ায় প্রায় ১২ বছর বৈষ্টবের দায়ীত্ব পালন করেন। আমার জানা নেই তার এই মানসিক জীবনের শুরু কবে থেকে আমি ছোটকাল থেকে বড় হয়ে দেখতে পাচ্ছি তার এরকম অবস্থা। নবীগঞ্জ বাজারের ছোট বড় সবার কাছে স্নেহভাজন প্রতিবন্ধী আসু। যার কাছেই হাত পাতেন সকলই কমবেশ সহায়তা করেন তাকে। আসু রায়ের কাছ থেকে অন্য মানসিক রোগীর মতো কেউ কোন খারাফ আচরণ ও ভারসাম্যহীন হয়ে মারা-মারী করতে দেখা যায়নি। আসু রায়ের আত্বিয় সুত্রে জানা যায়, প্রায় একমাস পূর্বে শহরের মধ্য বাজারে ১৩/১৪ বছরের অপ্রাপ্ত বয়সের অটো রিকসা চালক বেপড়োয়া ভাবে অটো রিকসা চালিয়ে আসু রায়ের পায়ে রক্তাত্ব জখম করে। এর পর থেকেই নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাস্বাধীন অবস্থায় আছেন তিনি। আসু রায় জানেনা কবে সুস্থ হয়ে তার চিরসম্বল একটা ঝুলি কাঁধে নিয়ে তার প্রিয় শহরে ঘুরতে পারবেন। সরকারি হাসপাতালগুলিতে গরীব, দুস্থ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিকিৎসা সুবিধার জন্য সমাজ কল্যাণ বিভাগ নামে একটি শাখা চালু রয়েছে। এই শাখার মাধ্যমে আসু রায়েকে উন্নত চিকিৎসার দাবী জানাচ্ছি। নবীগঞ্জে যানযটের অন্যতম কারন হিসেবে ব্যাটারি চালিত অটো রিকসা ও পায় দিয়ে চালিত রিকসাকেই চিহ্নিত করেছেন সচেতন মহল। অটো রিক্সার বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনাও। ১৩/১৪ বছরের অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়সের চালকরা বেপড়োয়া ভাবে রিকসা চালানোর কারনে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘঠনায় অনেকেই পঙ্গুত বরন করছেন। এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকানো কিংবা যাত্রিদের সাথে চালকের দুর্ব্যবহারসহ আছে আরো নানা বিড়ম্বনা। ব্যাটারি দিয়ে এসব রিক্সা চালাতে হয় বলে বিদ্যুতের অপচয় ঘটছে। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার পরিমাণ। অটো রিক্সার বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনাও। ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে অন্যদিকে শহরে বাড়ছে যানজট। এমনিতেই চাহিদামত বিদ্যুত না মেলায় লোডশেডিং-এ নবীগঞ্জবাসী। তার ওপর অটোরিক্সায় বিদ্যুতের বাড়তি ব্যবহারে শহরবাসীর যেন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এব্যপারে সচেতন মহলের অভিমত নবীগঞ্জে ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও টমটম চালকদের বয়স নীর্ধারণ করে ব্যবহার করা ও পরিবেশগত দূষণীয় কিনা এবং ব্যবহার অযোগ্য ব্যবহৃত ব্যাটারির বিভিন্ন পার্টসগুলো পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা তথ্যানুন্ধানের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করেন।