‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ : সিলেটে বোমা হামলার ১ মাস পূর্ণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ৮:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে সেনাবাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চলার সময় আতিয়া মহলের কাছে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার এক মাস পূর্ণ হয়েছে আজ মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল)। ওই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে সোয়াতের ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’-এ পাঠানপাড়ায় সংঘটিত বোমা হামলার সঙ্গে জড়িতরা নিহত হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ওই হামলার ঘটনায় র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান আবুল কালাম আজাদ ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হন সাতজন, আহত হন ৪০ জনেরও বেশি। আলোচিত এ ঘটনাটি তদন্ত করে মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য সিআইডি কিংবা পিবিআই দিয়ে তদন্তের জন্য কয়েকদিন আগে পুলিশ সদর দফতরে চিঠি পাঠানো হয়। তবে সেই চিঠির কোনও জবাব আসেনি বলে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
হামলায় আহতদের অনেকেই এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ও আহতদের স্বজনদের প্রশ্ন কারা বোমা মেরেছিল, এর পরিকল্পনাকারী কারা? অবশ্য, এর উত্তরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মৌলভীবাজারের বড়হাটে সোয়াতের ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’-এ নিহত তিন জঙ্গির মধ্যে একজন পাঠানপাড়ায় সংঘটিত বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা জানান, আতিয়া মহলের বাইরে যে বোমা হামলাটি হয়েছে এর নেপথ্যে কারা তা এখন শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় মহানগরীর মোগলাবাজার থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
নিহত ৪ জঙ্গির ডিএনএ রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ডিএনএ রিপোর্ট খুব শিগগিরিই আমরা পেয়ে যাব। এরপর তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিলেট মহানগর পুলিশের মোগলাবাজার থানার ওসি খায়রুল ফজল বলেন, ‘বোমা হামলাকারীরা মৌলভীবাজারে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে। হামলায় আহত সবারই সাক্ষ্যগ্রহণও শেষ হয়েছে, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। এছাড়াও মামলাগুলো পিবিআই কিংবা সিআইডিতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় জঙ্গি আস্তানায় সেনা অভিযানের মধ্যে কঠোর নিরাপত্তা থাকার পরও জোড়া বোমা বিস্ফোরণে সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় সিলেটের মোগলাবাজার থানায় দুটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমেছে র্যাব ও পুলিশের কাউন্টার টেরিরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। এছাড়া, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করে যাচ্ছে।
এর আগে, গত ১১ এপ্রিল আতিয়া মহলের বিস্ফোরক উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণের পর বাড়িটি মালিক উস্তার আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাসার ভাড়াটিয়ারা আতিয়া মহলে ফিরে যে যার মালামাল বুঝে নিয়ে অন্যত্র সরে পড়েন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ মধ্যরাতে সিলেটের আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। ওই রাত থেকে ভবনটি ঘিরে রাখার পর ২৫ মার্চ সকাল থেকে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নাম দিয়ে অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা। ২৮ মার্চ অভিযান শেষে চার জঙ্গি নিহতের খবর জানায় সেনাবাহিনী।