তাহিরপুরে স্ত্রীর লাশ লেগুনাতে রেখে স্বামীর পলায়ন !
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ৭:০৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে স্ত্রীর লাশ লেগুনাতে রেখে স্বামী ‘পালিয়ে’ গেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। শাপলা বেগম (২৭) নামের ওই গৃহবধূ উপজেলা সদর ইউনিয়নের বীরনগরের গ্রামের মশ্রব আরীর ছেলে সমছুন নূর মিয়ার স্ত্রী। শাপলা একই উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গ্রামের আবদুল হেকিমের মেয়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে তাহিরপুর থানা পুলিশ তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের ঘটনাস্থল থেকে নিহত শাপলার লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন। আজ শনিবার সকালে নিহত শাপলার বাবা আব্দুল হেকিম জামাই সমছুন নূর মিয়াকে একমাত্র আসামী করে তাহিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বীরনগর গ্রামের সমছুন নূর মিয়ার সাথে শাপলা বেগমের মাস কয়েক পূর্বে রাজধানী ঢাকায় থাকা অবস্থায় তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শাপলাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলে সমছুন নূরের পরিবারের লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেন। বাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে তারা পাশর্^বর্তী জয়নগর গ্রামের মৃত আবদুল হান্নানের ছেলে খোকন মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শাপলা বেগম পারিবারিক কলহের জের ধরে বিষ পান করেন। পরে খোকন ও তার পরিবারের লোকজন শাপলা বেগমকে চিকিৎসার জন্য তাহিরপুর সদর হাসপাতালে না নিয়ে নদীর ওপারে বীরনগরে সমছন নূরের বাবার বাড়িতে দিয়ে আসেন।
একপর্যায়ে অবস্থার অবনতি দেখে সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া, শাপলার স্বামী সমছুন নূর, তার সহোদর তারা মিয়া, আশিক নূর ও খোকনসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন চিকিৎসার জন্য শাপলাকে জেলা সদরে নিয়ে রওয়ানা হন। পথে বীরনগর গ্রামের ব্রিজের কাছে বেলা পৌনে ১১টার দিকে শাপলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মৃত্যুতে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের বীরনগর ব্রীজের পূর্ব পাড়ে লেগুনাতে তার লাশ ফেলে স্বামী সমছুন নূরসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে আশ্রয় দাতা খোকনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘরে রাখা বিষপান করেছিল শাপলা বেগম। এরপর প্রদিতবেশীদের সহযোগীতায় শাপলাকে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যাই, অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ নিয়ে যাবার পথে সে মারা যায়।’
কী কারণে শাপলা বিষপান করেছেন এমন প্রশ্নের উওরে খোকন বললেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হলে সমছুন নূর বাড়ি থেকে অনত্র চলে গিয়ে তিনদিন বাড়িতে না আসায় হয়তো অভিমানে বিষ পান করতে পারেন।’
শাপলার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুরে দাফন করা হয়েছে। তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর জানান, ‘সময়মতো ওই গৃহবধুকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হয়ত সুস্থ্য হয়ে উঠত। কিন্তু বিলম্বে সুনামগঞ্জ সদরে নেয়ার উদ্যোগ ও লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যাবার ঘটনাটি রহস্যজনক বলেই মনে হচ্ছে। এ বিষয়ে নিহতের পিতা বাদী জামাই সম্মুছুন নূরকে একমাত্র আসামী করে তাহিরপুর থানায় একটি থানায় মামলা দায়ের করেছেন