টানা বর্ষণে আবারো বিপর্যস্ত সিলেটের জনজীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ৩:০৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
গত দুদিনে হঠাৎ করে শুরু হওয়া মাঝারি এবং ভারী বর্ষণে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিলেটের জনজীবন। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে এটা চলতে পারে আগামী সোমবার পর্যন্ত। মঙ্গলবার থেকে থেমে থেমে ভারি বর্ষণ এবং ঝড় অব্যহত আছে। আর বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণ শুরু হয়ে তা সামান্য থেমে থেমে চলে শুক্রবার সারাদিন। মাঝখানে হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। গত চব্বিশ ঘন্টায় সিলেটে ৩৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। শুক্রবার বাতাসের আদ্রতা ছিলো সকাল ৯ টায় ৯৭ শতাংশ, বিকাল ৩টায় ৯৪ শতাংশ এবং সন্ধ্যে ৬টায় ৯৬ শতাংশ।
দিনভর এই বৃষ্টির ফলে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে নগরজীবন। শুক্রবার বন্ধের দিন থাকলেও ইদানীং অনেক দোকানপাট এদিন খুলতে দেখা যায়। কিন্তু গতকাল অন্যদিনের মতো তেমন দোকানপাট খুলতে দেখা যায়নি। কাঁচাবাজারগুলোতে বিক্রেতারা পলিথিন টাঙিয়ে বসলেও ক্রেতা ছিলেন খুব কম। বলতে গেলে পুরো ব্যবসা বণিজ্যে ছিলো একরকম স্থবিরতা। এর সাথে বাড়তি বিড়ম্বনা যোগ করে বিদ্যুতের আসা যাওয়া। সামান্য জোরে একটু বাতাস হলেই বৃষ্টি আসুক আর না আসুক চলে যায় বিদ্যুৎ। নগরী বিদ্যুতহীন থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা ।
বৃষ্টিপাতের ফলে কোথাও জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া না গেলেও দুর্ভোগ কম ছিলো না। কিছু সময় অবিরাম বৃষ্টি হলেই নালা এবং খাল উপচে পানি তলিয়ে দিয়েছে অনেক রাস্তাঘাট। কোথাও কোথাও সেই পানি রাস্তা ছাড়িয়ে ডুবিয়ে দিয়েছে অনেকের উঠোন কিংবা আঙিনা। যারা নীচ তলায় থাকেন তাদের কারো কারো বারান্দায় উঠে গেছে পানি। বৃষ্টি থেমে গেলে যদিও সেই পানি নেমে যায় কিন্তু ময়লা পানি আর কাদায় ভরিয়ে দিয়ে যায় উঠোন কিংবা বারান্দা। কিছু সময় পর আবার বৃষ্টি হলে আবার সেই একই দৃশ্য। বৃষ্টির সময় পানি ড্রেন বা নালা ছাড়িয়ে রাস্তায় উঠে যাওয়ায় পথচারীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রিকশাসহ হাল্কা দু একটি যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চালাচল করে। এবড়ো থেবড়ো আর খানাখন্দে ভরা রাস্তায় পানি জমে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরো নগরীর সবগুলো রাস্তার চিত্র ছিলো প্রায় অভিন্ন, কাদা আর পানিতে মাখামাখি।
এর আগে গত ২৯ মার্চ থেকে সাপ্তাহব্যাপী টানা বর্ষণে গোটা সিলেট অঞ্চলে বড়ো ধরণের বিপর্যয় ঘটে। হাওরাঞ্চলে ভেঙে যায় একাধিক ফসলরক্ষা বাঁধ। তলিয়ে যায় হেক্টরের পর হেক্টর ধানসহ কৃষিজমি। আশংকা দেখা দেয় বন্যার। যার রেশ এখনো কাটেনি। হাওরে ডুবে যাওয়া ধান পচে বিষাক্ত গ্যাস তৈরী হওয়ায় এখন সেখানে মারা যাচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। আবার সেই মাছ খেয়ে মারা যায় শতশত হাঁস। ফলে হাওরাঞ্চলের মানুষদের সীমাহীন দুভোর্গের মধ্যে পড়তে হয়েছে। তার উপর নতুন করে আবার বৃষ্টিপাত তাদের বেশ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। হাওরের দুর্ভোগের প্রভাব যে এসে নগরেও লাগবে তা একেবারে স্পষ্ট।