মৌলভীবাজার জঙ্গি আস্তানা : বাসিন্দাদের চিনেন না গ্রামবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০১৭, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের প্রবাসীর মালিকানাধিন বাড়িটি দুই মাস আগে ভাড়া নিয়েছিলেন বেলাল আহমদ নামের এক ব্যক্তি।
টিনশেডের ওই বাড়িটির অবস্থান গ্রাম থেকে একটু দূরে, বিলের পাড়ে। ফলে এই বাড়ির লোকজনদের সাথে রাস্তায় দেখা হলেও কখনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে নাসিরপুর গ্রামের এই বাড়িসহ শহরের বড়হাট এলাকার আরেকটি বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ। দুই বাড়ির মালিকই সাইফুর রহমান নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। বুধবার সন্ধ্যার দিকে সোয়াট সদস্যরা এসে নাসিরনগরের বাড়িটিতে অভিযান শুরু করে।
স্থানীয় সরকার বাজারের এক দোকানী বলেন, আমাদের এলাকার এক রিক্সার চালক জানান, কয়েক দিন তিনি ওই বাড়িতে রিক্সা করে চালের বস্তা নিয়ে গেলেও এই বাড়ির বাসিন্দারা কখনো বাড়ির ভেতরে যেতে দেয়নি। গেইট থেকে তারা নিজেরাই চালের বস্তা বহন করে নিয়ে যেতো। কথনোই ভেতরে যেতে দেয়নি।
নাসিরপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এখানে থাকা দুজন পুরুষকে তিনি কয়েক দিন রাস্তায় দেখেছেন। তবে তাদের সাথে কোন দিন কথা হয়নি।
প্রায় দিন সকালের দিকে এই ঘর থেকে কয়েকজন যুবককে বেরিয়ে যেতে দেখলেও, কোনো নারীকে কখনো দেখনি বলে জানান এই বাড়ির পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধা।
নাসিরপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা জানান, গ্রামের প্রতিটি বাড়িই খুব কাছাকাছি দুরত্বের। ফলে এসব বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে সকলের চেনা পরিচয় আছে। কিন্তু ঘিরে রাখা বাড়িটির অবস্থান গ্রামের একপাশে ও বিলের পাড়ে। এছাড়া বাড়ির মালিক দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী। ফলে এই বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে গ্রামবাসীর কোনো যোগাযোগ নেই।
বাড়িটির কেয়ারটেকার জুয়েল মিয়া জানান, প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির কর্মকর্তা পরিচয়ে বাড়িটি ভাড়া নেন বেলাল আহমদ। এ বাড়িতে বেলাল, তার স্ত্রী ও শ্যালক থাকতেন। তারা তিনজন খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন এবং রাতে বাড়ি ফিরতেন।
তিনি জানান একই পরিচয়ে বড়হাটের বরহাটের নির্মাণাধীন তিনতলা বাড়িটি তিন মাস আগে ভাড়া নেন মাহফুজ নামে আরেক ব্যক্তি। পুরো বাসায় থাকতেন মাহফুজ, তার চার সন্তান, স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ীসহ ৮ জন।
এদিকে, আগের দিন মধ্যরাত থেকে ঘিরে রাখার পর বুধবার বিকেলে নাসিরনগরে প্রবেশ করে পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াট। সোয়া ছয়টার দিকে তারা অপারেশন শুরু করে। এরপর অন্ধকার নেমে আসলেও বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে মুর্হুমুহ গুলি বষনের শব্দ শোনা যায়।
টানা দেড় ঘন্টা গুলি বর্ষন চলে।
পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান জানিয়েছেন, অভিযানের ব্যাপারে রাতেই সাংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিলো। কিন্তু অভিযান এখনো শেষ হয়নি। অভিযান শেষ হলে ব্রিফিং করা হবে।