প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকায় বড়লেখা থেকে কলেজ ছাত্র গ্রেপ্তার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২:৩৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে মুন্না আহমেদ নান্নু (২২) নামে এক কলেজ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া দুইটায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মুন্নার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুন্না বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের মাইজগ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে ও বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের বিএ দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র।
আজ রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশনুজ্জামান সিদ্দিকী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের সহযোগিতায় মুন্না আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৬ সালের শেষের দিকে ফেসবুকের মাধ্যমে কিছু বন্ধুর সাথে মুন্না আহমদের পরিচয় হয়। তারা সবাই মিলে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে। তারা সবাই মিথ্যা পরিচয়ের (ফেক আইডি) মাধ্যমে ফেসবুক চালাতো।
আরও বলা হয়, বিভিন্ন গণপরীক্ষা যেমন এসএসসি, দাখিল, ডিগ্রি ইত্যাদি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফেসবুকে তাদের তৈরি গ্রুপের মাধ্যমে ফাঁস করে পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করতো। সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষার কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে তারা জড়িত ছিল। মুন্না আহমেদের ফেসবুক আইডি হচ্ছে শেখ আব্দুল আলম নামে।
সংবাদ সম্মেলনে মুন্না আহমেদকে উপস্থিত করা হলে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মুন্না জানান, তার ফ্রেন্ডলিস্টের একজন বন্ধু তাকে এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত করে। সেই বন্ধুর সাথে তার কখনো দেখা হয়নি। তাদের ১৭ জনের একটি গ্রুপ আছে। কেউ কাউকে চেনেন না। টাকা বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করেন।
তিনি বলেন, তারা সাধারণত আগের রাতে অথবা পরীক্ষার এক ঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। বিনিময়ে পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে পান। অনেকে টাকা দেয়ও না। এ বছর ঢাকা বোর্ডের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। ১৮ জনের মতো পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা পেয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মুন্না আহমেদের সাথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের অনেকেই জড়িত। তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বড়লেখা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম ও খন্দকার আশফাকুজ্জামান এবং ডিআইও-ওয়ান মো. মারুফ হোসেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে রোববার রাতে মুন্না আহমদকে বড়লেখা থানায় নেয়া হয়।
বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দেবদুলাল ধর রাত সাড়ে ৯টায় মুন্না আহমদকে বড়লেখা থানায় নেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশনুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের প্রশ্ন কোনোটা মিলে, কোনোটা মিলে না। এবার দু’টো মিলেছে। এটি জাতীয় বিষয়। তাই তদন্তের স্বার্থে অনেককিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।