নির্লোভ সাদামনের মানুষ ওসমানীনগরের লুৎফুর রহমানের বিজয় কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না !
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওসমানীনগরের কৃতি সন্তান লুৎফুর রহমান। সিলেট জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান। ভোটের মাঠে লড়াই করে এই প্রবীন ব্যক্তিকে বসতে হয়েছে জেলা পরিষদের চেয়ারে। তার এ বিজয় কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। নির্বাচনের পুর্বে বয়সের ভারে ন্যুজ এই ব্যক্তিটিকে নিজ দলের ভেতরের লড়াইয়ে চিন্তায় রেখেছিলো। জীবনের শেষ নির্বাচনে তাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে তার নিজ দলের নিজ এলাকার এক প্রার্থীর সাথে। অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাকেই বেছে নিয়েছেন সিলেট জেলার জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার একতরফা বিজয়ের কথা ছিল। যেহেতু এই নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি অংশ নেয়নি। কিন্তু তা হতে দেয়নি তার নিজ দল আওয়ামীলীগ। অভিযোগ রয়েছে সারাটি জীবন নিঃস্বার্থ ভাবে দলের জন্য কাজ করা এই ব্যক্তির পথে কাঁটা বিছিয়ে দিতে প্রার্থী করা হয়েছে তারই এলাকার এনামুল হক সরদারকে। তবে এসবের কিছুই তার পথে বাধা হতে পারেনি। বিজয়ের হাসি হেসেছেন ওসমানীনগরের এই কৃতি সন্তান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতা বলেন, এমনটা হওয়ার কথা ছিলনা। অনায়াসে এই নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার কথা ছিল লুৎফুর রহমানের। প্রবীন এই মানুষটির জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাই যখন মাঠে ছিল তখন আমাদের নিজ দলের অনেক নেতার অসহযোগীতা তাকে নির্বাচনের ফলাফলের পুর্ব পর্যন্ত উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রেখেছিল। রাজনৈতিক সংকীর্নতা পরিহার না করলে আগামীর দিনগুলি আওয়ামীলীগের জন্য কঠিন হবে।
লুৎফুর রহমান একজন নির্লোভ সাদা মনের মানুষ,এখনও থাকেন ভাড়া বাড়িতে। সৎ ও পরিচ্ছন্ন এই রাজনীতিবিদ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অন্যতম ঘনিষ্ট সহচর,বাংলাদেশের সংবিধানে সিলেট বিভাগের একমাত্র জীবিত স্বাক্ষর কারী। জন্মগ্রহণ করেন সিলেট জেলার তৎকালীন বালাগঞ্জ ( বর্তমান ওসমানীনগর) উপজেলার বড় হাজিপুর গ্রামে ১৯৪০ সালের ৮ই ডিসেম্ভর। তাঁর পিতার নাম ছৈদ উল্লাহ এবং মাতা সমিতা ভানু। ছাত্রজীবনে ১৯৬২ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার মাধমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। বাঙালী জাতির মুক্তি সংগ্রামের জন্য ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন, ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মাত্র ২৯ বছর বয়সে বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ আসন থেকে সদস্য নির্বাচিত হন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধের একজন সফল সংঘটক ছিলেন, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য হিসেবে হাতেলেখা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে স্বাক্ষর প্রদানকারীদের একজন। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে আছেন।