কুশিয়ারায় রাতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, দিনে সরবরাহ : প্রশাসন নির্বিকার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০১৭, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদী থেকে রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বিরাট এলাকাজুড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না-করায় এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়- উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
গত বছর স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আর্থিক জরিমানা ও মালামাল জব্দ করে। বালু উত্তোলনকারীরা কিছুদিন নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিনের বেলা বালু উত্তোলন না-করে রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। প্রশাসন যাতে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না-পারে তাই রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনের কৌশল গ্রহণ করেছে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা।
নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করায় গত বছরের নভেম্বর থেকে নদীর তীরবর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার লামা গংগাপুর, উজান গংগাপুর, গয়াসি, ভেলকোনা, সুলতানপুর মানিকোনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তর্গত এলাকার অনেক কৃষিজমি, বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে ফেঞ্চুগঞ্জ-মানিকগঞ্জ সড়কে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ- উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইছন মিয়ার নেতৃত্বে কুশিয়ারা থেকে রাতের বেলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে কুশিয়ারার তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা যায়- নদীর তীরবর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকাধিন উত্তর ইসলাম এলাকায় বালুভর্তি দুটি বোট থেকে পাইপের মাধ্যমে উত্তর ইসলাম এলাকায় হোসেন আলী নামক এক ব্যক্তির প্রাচীরবেষ্টিত নিচু জায়গা নদীর বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়- আওয়ামী লীগ নেতা ইছন মিয়া হোসেন আলীর জায়গাতে বালু সরবরাহ করছেন।
ভেলকোনা গ্রামের বাসিন্দা টিপু সুলতান বলেন- অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা রাতের বেলা ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছে। বিষয়টি ফেঞ্চুগঞ্জ থানার পুলিশকে অবহিত করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। রাতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয় আর দিনের বেলা বালু পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। প্রশাসন দেখেও না-দেখার ভান করায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা ইছন মিয়া বলেন- আলী হোসেনের জমিতে আমি বালু সরবরাহ করছি। তবে ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকা থেকে আমি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছিনা। বিয়ানীবাজার এলাকার বালুমহাল থেকে বালু কিনে নিয়ে আসছি।
এ বিষয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুরে জান্নাত বলেন- বিষয়টি অবগত হওয়ায় বিধি মোতাবেক অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।