হবিগঞ্জে ৫ মাস ধরে যুবক নিখোঁজ, পাকিস্তান ফেরত যুবক নিয়ে সন্দেহ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০১৬, ৭:১৮ পূর্বাহ্ণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জ শহরের এক যুবক গত ৫ মাস ধরে নিখোঁজ। কোরআনের হাফেজ ওই যুবক গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন তার বাবা। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
অপরদিকে, পাকিস্তান ফেরত আনিস চৌধুরী প্রায়ই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। চলাফেরা নিয়ে জনমনে নানা সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়- হাফেজ মো. আব্দুল মালেক ওরফে লিটন মিয়া। হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুর এলাকার বাসিন্দা এই যুবক গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। মালেক ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে শহরের কোর্ট মসজিদ ও পরে পইল সুন্নীয়া মাদ্রাসা থেকে কোরআনের হাফেজী সম্পন্ন করে। ৩ বছর স্থানীয় একাধিক মসজিদে তারাবী’র নামাজও পড়ায় সে। পরে শায়েস্তানগর এলাকায় চালের ব্যবসাও করে। কিন্তু ব্যবসা করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে ঋণে। সেই ঋণের টাকার অধিকাংশই পরিশোধ করেন রিকশাচালক বাবা আব্দুল খালেক। ঘটনার দিন স্ত্রী আফিয়া খাতুনের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
নিখোঁজের মাসখানেক পর তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে মালেক জানায়- সে বরিশাল রয়েছে।
নাম প্রকাশ না-করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান- আনিস প্রায় সময়ই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে বিভিন্ন দেশে চলে যায়। সে এক জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল বলেও জানান স্থানীয়রা।
আনিস ২০০৭ সালে সকলের অগোচরে রাতের আঁধারে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে পাড়ি জমায়। সেখানে অবস্থানকালে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে। কারাগারে থাকা অবস্থায় সখ্যতা গড়ে উঠে বিভিন্ন অপরাধীর সাথে। কয়েক মাস কারাভোগের পর অপরাধীদের সহায়তায় মুক্ত হয়ে সে তাদের হাত ধরে আফগানিস্তানে পাড়ি জমায়। এর কয়েক মাস আফগানিস্তানে থাকার পর সেখান থেকে সে ইরান হয়ে পাকিস্তানে অবস্থান নেয়।
পরে আনিস পাকিস্তানে অবস্থানকালে অপরাধ কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। প্রায় দেড় বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে আবারও বাংলাদেশে এসে ছদ্মবেশ ধারণ করে। দেশে এসে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান ও চলাফেরার উপর সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের।
বিষয়টি সম্প্রতি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন অবগত হলে পুলিশও তার উপর নজরদারি রাখছে।
ইদানিংকালে আনিস এলাকায় প্রচার করে বেড়াচ্ছে হবিগঞ্জ শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। কিন্তু সে শহরে বাসা ভাড়া নিলেও বাসায় কখনো অবস্থান করে না বলে জানান পার্শ্ববর্তী লোকজন। তার আশপাশের লোকজনও তার চলাফেরার উপর সন্দেহ পোষণ করছেন।
এ অবস্থায় তার প্রতি পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধি অথবা তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেড়িয়ে আসতে পারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে মনে করেন সচেতন মহল।